পঁচিশটি বই যদি আপনি পড়তে পারেন আমি হলফ
করে বলতে পারি আপনি অনেক বড় স্বপ্ন
দেখতে আর পিছপা হবেন না। আপনার
আত্ববিশ্বাস বাড়বেই। আচ্ছা ভয় পাচ্ছেন না তো?
এত বই!! এখানে জবের পরীক্ষায় লাগবে না এমন
একটি বইও নেই। সবই আপনার প্রয়োজনীয়।
তবে ভারি ধাচের কোন বই এখানে নেই। তাই ভয়
পাবেন না। একবার শেষ করুন। খুব বেশি সময়
লাগবে না। মাস তিনেক লাগতে পারে। ভাল একটা
চাকুরি প্রথম বারেই যদি চান এটুকু কষ্ট তো
করতেই হবে। নাকি?
বিষয়: যে মৌলিক বইগুলো ক্যারিয়ার গঠন তথা চাকুরি
পেতে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য
করবে...........
যারা পড়াশুনা করে তাদের বেশিরভাগেরই লক্ষ্য
হলো চাকুরিতে নিজেকে নিয়োজিত করা। আর
এক্ষেত্রে বিসিএস এক নম্বর পছন্দের তালিকা
দখল করে আছে। দ্বিতীয় স্থানে সরকারি অন্য
চাকুরী। আর তৃতীয় স্থানে ব্যাংক জব। এটি একটি
সাধারণ অনুমান। কারো কাছে তা ভিন্ন পর্যায়েরও
হতে পারে। যারা চাকুরি করেন তাদের চিত্র এরকম।
আর কিছু আছে যারা পড়াশুনা করে ব্যবসা বা
রাজনীতি করেন অথবা বিদেশে গমন করেন বা
অন্য কিছু করেন। অর্থাৎ তারা চাকুরি করেন না।
তাদের জন্য এ কথা গুলো প্রযোজ্য নয়।
যে চাকুরিই করেন না কেন আপনি পরীক্ষায়
অবতীর্ণ না হয়ে তা পাবার সুযোগ নেই।
আপনাকে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে
অন্যকে হারিয়ে তবেই জিততে হবে। আর
প্রতিযোগিতা এখন প্রবল তা বিসিএস হোক বা অন্য
চাকুরিই হোক। ১২০ জন নিয়োগ দিলে আবেদন
করে এক লাখ বিশ হাজার। সুতরাং প্রতিযোগিতা
কোন পর্যায়ে পৌছে গেছে আশা করি সহজেই
অনুমেয়। আর এই স্রোতে টিকতে হলে
প্রয়োজন জ্ঞান এবং বুদ্ধিমত্তা। সাম্প্রতিককালে
দেখা গেছে প্রশ্নকর্তাগন মৌলিক বইয়ের দিকে
ঝুকছেন। তাছাড়া প্রেক্ষাপটসহ জানতে হলে
মৌলিক বইয়ের কোন বিকল্প নেই। শুধু গাইড
পড়ে বা শর্টকাটে চাকুরি তো দুরের কথা
প্রিলিতে টেকাই কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে। তাই যদি
প্রতিযোগিতায় নামতে চান তবে কোমড়
বেঁধেই নামতে হবে। টাচ্ এন্ড পাস করে
ডিপার্টমেন্ট এর পরীক্ষার বৈতরণী পার হওয়া যায়
কিন্তু চাকুরির বাজারে টিকে থাকা যায় না। তাই এই
তত্ত্ব মাথায় রাখুন, "নাচতে যখন নেমেছি; তো
আর ঘোমটা দিব না"। এর অর্থ হলো প্রত্যেকটা
জিনিসের নিজের কিছু বৈশিষ্ট্য বা মহিমা আছে। আর
তা মেনেই ওটিকে পেতে হবে।
কিছু মৌলিক বইয়ের নাম বলা যায় যা আপনাকে
প্রিলিমিনারি, লিখিত এমনকি কিছু বই ভাইভাতেও সাহায্য
করবে।
ক) ক্লাস সিক্স টু টেন সাধারণ গনিত বই (জ্যামিতিসহ
৫টি বই)
খ) অষ্টম শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় পত্র বই ও সাধারণ
বিজ্ঞান বই (২টি)
গ) নবম-দশম শ্রেণির ইতিহাস, পৌরনীতি, ভূগোল,
সামাজিক বিজ্ঞান, সাধারণ বিজ্ঞান, বাংলা দ্বিতীয় পত্র
বই, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বই (৭টি)
ঘ) একাদশ-দ্বাদশ শ্রেনির পৌরনীতি ও সুশাসন
প্রথম পত্র ও দ্বিতীয় পত্র বই (প্রফেসর
মোজাম্মেল হক), আইসিটি বই (প্রকৌশলী মজিবর
রহমান) [৪টা]
ঙ) বাংলাদেশের ইতিহাস ১৯০৫- ১৯৭১ (অধ্যাপক ড.
আবু মোঃ দেলোয়ার হোসেন) চ) বিশ্ব
রাজনীতির একশ বছর (ড. তারেক শামসুর রেহমান)
ছ) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, সংগঠন ও পররাষ্ট্রনীতি
(শাহ্ মোঃ আবদুল হাই)
জ) বাংলাদেশ স্টাডিজ (ওবায়েদ ও আরেফিন)
ঝ) লাল নীল দীপাবলি (ড. হুমায়ুন আজাদ)
ঞ) অসমাপ্ত আত্বজীবনী (শেখ মুজিবুর
রহমান)
ট) গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান
প্রত্যেকটি বই নতুন এডিশন দেখে নিবেন।
এবার আসুন পড়বেন কিভাবে? প্রত্যেকটা বই
প্রথমে রিডিং দিবেন। আর পড়ার সময় গুরুত্বপূর্ণ
অংশগুলো দাগিয়ে রাখবেন। পরে যখন পড়বেন
তখন শুধু দাগানো অংশগুলো পড়বেন। এতে
সময় বেঁচে যাবে। আর কারো যদি সময় থাকে
তবে এমসিকিউ বের করে নোটও করতে
পারেন। তবে না পারলেও ক্ষতি নেই।
একটা কথা মনে রাখবেন, বাংলা, ইংরেজি, গনিত, সাধারণ
জ্ঞান ও বিজ্ঞান এই পাঁচটি বিষয়ের ওপরই
প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় প্রশ্ন হয়ে থাকে।
তাই এগুলোর ওপর যদি ভাল ধারনা বা দখল নিতে
পারেন তবে আপনি যেখানে পরীক্ষা দিবেন
টিকে যাবেন। দু'হাত দিয়ে চাকুরি ঠেলে সরাতে
পারবেন না। আশে পাশে তাকালে খেয়াল
করবেন, যারা চাকুরি পায় তারা সব জায়গায়ই টিকে।
বিসিএসে টিকে, ব্যাংকেও টিকে, অন্য চাকুরিতেও
টিকে। আর যার হয় না সে কোথায়ও টিকে না।
রহস্য কী? কিছুই না। মৌলিক বিষয়ে দক্ষতা না থাকাই
পরাজয়ের মূল কারণ। তাই আগে নিজেকে
প্রয়োজনীয় বিষয়ে তথ্য মজুদ করতে হবে।
তারপর দেখেন কী হয়!
যারা তৃতীয় বর্ষে আছেন বা তার ঊর্ধ্ব এবং
ডিপার্টমেন্ট এ চাপ কম আছে তারা যদি জবের পড়া
শুরু করতে চান তবে এই মৌলিক বইগুলো পড়া
আরম্ভ করতে পারেন। একটা কথা মাথায় রাখবেন,
নিজ ডিপার্টমেন্টকে শিকেয় তুলে রেখে এসব
বই পড়বেন না। সময় পেলে তবেই পড়বেন।
শেষে বলা যায়, এই বইগুলো পড়ার পর যে
পরীক্ষা দিবেন তার সাথে মিল রেখে কিছু গাইড
আয়ত্ত করে নিবেন। দেখবেন, অনেক
সহজে বুঝতে পারছেন। আসলে পড়ার কোন
বিকল্প নেই। শুধু পড়লেই হবে না; মনেও
রাখতে হবে। আর মনোযোগ দিয়ে পড়লে
পড়া মনো বিয়োগ না হয়ে মনে ও মাথায়ই
ঢুকবে। ধন্যবাদ।
শাহ্ মো: সজীব
বিসিএস (প্রশাসন)
Leave a Comment