ঈদুল আযহার দিন মুস্তাহাব কাজসমূহ
 
দু’ ঈদের দিন বান্দার জন্য আল্লাহর তায়ালার পক্ষ থেকে বিশেষ নিয়ামত, আতিথ্য ও মর্যাদার। এ দু’ দিন শরিয়তসম্মত আনন্দ-উৎসবের পাশাপাশি ইবাদতের মূল্যবান সময়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ভাষায় ঈদুল আযহার দিন পশু কোরবানি আল্লাহ তায়ালার নিকট সর্বশ্রেষ্ঠ আমল বা ইবাদত। একাধিক দুর্বল হাদীসে দু’ ঈদের রাত জাগ্রত থেকে ইবাদতের ফযিলত সম্পর্কে কিয়ামতের দিন বিশেষ মর্যাদা লাভের কথা বর্ণিত হয়েছে। অবশ্য মুহাদ্দিসগণের নিকট নফল ইবাদতের বেলায় দুর্বল হাদিস এর ওপর আমল স্বীকৃত।

এছাড়া মহিমান্বিত ঈদুল আযহা ও তৎসংশ্লিষ্ট আরো কিছু ওয়াজিব ও মুস্তাহাব আমল রয়েছে। যেমন-

# ৯ জিলহজ্জ ফজর থেকে ১৩ জিলহজ্জ আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরয নামাজ শেষ করার সাথে সাথে ইমাম-মুক্তাদি, পুরুষ-মহিলা, মুকিম-মুসাফির, একাকী নামাজ আদায়কারী সবার জন্য তাকবিরে তাশরিক- ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ’ ১বার পড়া ওয়াজিব। পুরুষ মধ্যম উঁচু স্বরে এবং মহিলা নীচুস্বরে পড়বেন। এ দিনসমূহে নতুন-পুরাতন কাযা নামায আদায় করলেও তাকবির পড়তে হবে।

ঈদুল আযহার দিন মুস্তাহাব কাজসমূহ:

# ঈদের দিন খুব ভোরে ঘুম থেকে জাগা।

# মিসওয়াক করা।

# গোসল করা।

# পবিত্র সুগন্ধি ব্যবহার করা।

# উত্তম কাপড় পরিধান করা।

# শরিয়তস্মমত সাজসজ্জা গ্রহন ও হাসিখুশি করা।

# ঈদগাহে পায়ে হেটে ও তাড়াতাড়ি যাওয়া।

# এক রাস্তা দিয়ে যাওয়া, অপর রাস্তা দিয়ে আসা।

# যাওয়া-আসার সময় উচ্চস্বরে তাকবিরে তাশরিক পড়া।

# ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করা।

# কোরবানিকারী ব্যক্তি কোনোকিছু না খেয়ে কোরবানির গোশত দিয়ে পানাহার শুরু করা।

# কোরবানিকারী নিজ হাতে পশু জবেহ করা, সম্ভব না হলে জবেহকালে উপস্থিত থাকা।

# যেসব কোরবানিকারী জিলহজ্জের ১ম তারিখ থেকে চুল, নখ ইত্যাদি কাঁটা থেকে বিরত থেকেছেন, তারা কোরবানির পর তা কাঁটা।

উল্লেখ্য, খোতবা প্রদানকালে মনোযোগ সহকারে খোতবা শুনা ওয়াজিব। এ সময় টাকা সংগ্রহ করা, মুসল্লিরা খতিবের সাথে তাকবির পড়া, কথা বলা, গল্প করা ইত্যাদি কোনোকিছুই জায়েয নয়, বরং পাপ।

ঈদের নামাজ আদায় পদ্ধতি

১। প্রথমত, স্বাভাবিক নামাজের মতোই তাকবিরে তাহরিমা বলে হাত বাঁধবেন। তারপর ছানা পাঠ করবেন।

২। তারপর অতিরিক্ত তিনটি তাকবির বলবেন। প্রথম দুই তাকবিরে হাত তুলে ছেড়ে দেবেন এবং তৃতীয় তাকবিরে হাত বেঁধে ফেলবেন।

৩। তারপর আউজুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ পড়ার পর ইমাম সুরা ফাতিহা পড়ে এর সঙ্গে অন্য একটি সুরা মেলাবেন।

৪। তারপর স্বাভাবিক নামাজের মতোই রুকু-সিজদা করে প্রথম রাকাত শেষ করবেন।

৫। দ্বিতীয় রাকাতে ইমাম কিরাত পড়া শেষে রুকুতে যাওয়ার আগে অতিরিক্ত তিন তাকবির দেবেন। প্রতি তাকবিরের সঙ্গে হাত উঠাবেন এবং ছেড়ে দেবেন। তারপর চতুর্থ তাকবির বলে রুকুতে চলে যাবেন।

৬। তারপর স্বাভাবিক নামাজের মতোই নামাজ শেষ করবেন।

৭। নামাজ শেষে ইমাম মিম্বারে উঠবেন। দুটি খুতবা দেবেন। এ সময় ইমামের খুতবা মনোযোগসহকারে শুনতে হবে। কোনো ধরনের কথা বলা বা অন্য কাজে ব্যস্ত হওয়া যাবে না।

৮। খুতবা শেষে সবাই ঈদগাহ ত্যাগ করবেন।

Leave a Comment